শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন
বিন্দু তালুকদার:
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব পাগলা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ভিজিএফ ও কাবিখা প্রকল্পের চাল আত্মসাতের মামলা দায়েরের পর পরিষদ কার্যালয় থেকে ২২৮টি ভিজিডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে ভিজিডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ইউনিয়নের ২২৮ জন ভিজিডি উপকারভোগীর কার্ড উদ্ধার করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন ও তদারককারী কর্মকর্তা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার নূরে আলম সিদ্দিকী। এ সময় জুন মাসের ভিজিডির চাল গোদামে আছে কিনা তাও দেখেন দুই কর্মকর্তা। জুন মাসের চাল পরিষদের গোদামে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। তবে ভিজিডির ৩০ কেজির বস্তার পরিবর্তে ৫০ কেজি চালের বস্তা গোদামে দেখতে পান তাঁরা।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, ভিজিডির চাল উত্তোলন করা হয়েছে জুন মাসে। বিপদে পড়ে চেয়ারম্যান সোমবার গোদামে নতুন চাল ঢুকিয়েছেন।’
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক নির্দেশে আমরা পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় থেকে ২২৮টি ভিজিডি কার্ড নিয়ে এসেছি। কার্ডগুলো আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দিয়েছি। চাল বিতরণের সময় এসব কার্ড উপকারভোগীদের হাতে দেয়া হবে। জুন মাসের চাল ৫০ কেজি বস্তা আকারে পরিষদের গোদামে পাওয়া গেছে। চেয়ারম্যান বলেছেন, জুন মাসে নাকি ভিজিডির চাল ৫০ কেজির বস্তায় করে সরবরাহ করা হয়েছিল। তবে বিতরণে বিলম্বের বিষয়ে সঠিক জবাব দিতে পারেন নি ইউপি চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান আমাদের জানিয়েছেন, কার্ড মহিলারা হারিয়ে ফেলতে পারেন তাই পরিষদে রাখা হয়েছিল।’
পূর্ব পাগলা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন বলেন, ‘ট্যাগ অফিসারসহ দুইজন অফিসার মঙ্গলবার এসে জুন মাসের চাল দেখে গেছেন। ৫০ কেজির চালের বস্তা গোদামে মওজুদ রয়েছে। আজ ভিজিডি কার্ডধারীদের ৩০ কেজি করে চাল ওজন করে দেয়া হবে।’ তবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিডির কার্ড উদ্ধারের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে দাবি করেছেন।
এদিকে জুন মাসে ভিজিডির চাল ৩০ কেজির বস্তায় সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্য গোদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) শাহীন মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা জুন মাসে সবাইকেই ভিজিডির চাল ৩০ কেজির বস্তা হিসাবে দিয়েছি। কাউকে ৫০ কেজির বস্তা দেয়া হয়নি।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সফি উল্লা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিডি কার্ড নিয়ে আসা হয়েছে। উপকারভোগীদের কার্ড নিজের কাছে রাখা ও চাল বিতরণে বিলম্বের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আজকের মধ্যে সবাইকে চাল দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন ভিজিডির চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে বলে সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক উপকারভোগী। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত জুন মাস থেকে ভিজিডি কর্মসূচির ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন না উপকারভোগীরা। অনেকের ভিজিডি কার্ড ও সঞ্চয় বই ইউপি চেয়ারম্যান নিজের কাছে নিয়ে রেখে দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চালের বস্তা বিতরণ করার কথা থাকলেও দুই-তিন মাস পরপর বালতি দিয়ে বিতরণ করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়।
সূত্র: সুনামগঞ্জের খবর